উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে লালমনিরহাটে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে এখন বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৬টায় তিস্তা ব্যারেজের দোয়ানী পয়েন্টে এ পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়।
রাত থেকেই তিস্তার পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেতে থাকলেও বিকেল তিনটায় বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়। এভাবে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকলে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বন্যার পূর্বাভাস দিয়েছিল লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড।
গত বুধবার বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহিত হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটারের নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও বিকেলের দিকে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। বিকেল তিনটায় ১০ সেন্টিমিটার ওপরে রেকর্ড করা হয়। একই দিন বিকেল ৬টায় নদীর পানি ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে তিস্তা ব্যারেজের সবকটি জলকপাট খুলে দেয়া হয়ে হয়েছে। পানি ভাটি এলাকায় ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হবে।
এ বছরে পঞ্চম দফা বন্যার কবলে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে জেলার পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের।
তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধিতে জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও ভাটি এলাকায় আগামীকাল সকাল নাগাদ আবারও বন্যার কবলে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, পানি আরও বাড়তে পারে। তবে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সব রকম প্রস্তুতি রয়েছে।